ajkerit

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দাতা কে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ( সংক্ষেপে ঢাবি) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন অধিভুক্ত একটি স্বায়ত্তশাসিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাবি ১৯২১ সাথে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং   এর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ১ জুলাই,১৯২১ সাল থেকে ।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলা হয়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষা ও সংস্কৃতি তে  বড় অবদান রেখে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ২৮৩ একরের সুবিশাল ক্যাম্পাস। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দাতা কে


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নামটি মানেই একটি জীবন্ত ইতিহাস, ইতিহাসের এক চলমান অধ্যায় এ ঢাবি।৷  স্বাধীন বাংলাদেশ জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। বাংলাদেশের সেরা এই বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠার পেছনের ইতিহাস টাও অনেক চমকপ্রদ।

১৯২১ সালের ১  জুলাই বিজ্ঞান, কলা ও আইন মোট ৩টি অনুষদের অধীনে  ১২টি বিভাগে সর্বমোট ৮৪৭ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২১ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে  প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও,১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদের ঘটনার মধ্য দিয়ে এর বীজ বপন হয়েছিল। বঙ্গভঙ্গের (১৯০৫ সালে) মাধ্যমে ঢাকাকে রাজধানী করে পূর্ব বাংলা ও আসামকে নিয়ে যে আলাদা রাজ্য গঠিত হয়েছিল। যা এই অঞ্চলের মুসলিম জনগোষ্ঠীর দীর্ঘ দিনের আশা ও চাওয়া–পাওয়ার বাস্তব প্রতিফলন ছিল । ১৯০৫ সালেট বঙ্গভঙ্গ  এই অঞ্চলের মুসলমান জনগোষ্ঠীর  শিক্ষা, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে এবং সর্বোপরি তাদের স্বাবলম্বিতা অর্জনের ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক ছিল। কিন্তু নানা বিরোধিতার মুখে ১৯১১ সালে ইংরেজ সরকার বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হয় 

তৎকালীন  সময় কলকাতার তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত ও হিন্দু নেতারা ঢাবি প্রতিষ্ঠা রোধে স্মারকলিপি প্রদান করেই ক্ষান্ত থাকেননি, তাঁরা প্রতিবাদ সভা থেকে শুরু করে র‍্যালি পর্যন্ত আয়োজন করেছিলেন।

১৯১১ সালের বঙ্গভঙ্গ রদের ঘটনায় পূর্ব বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশ)  মুসলিম জনগণ ব্যাপক ভাবে ক্ষুব্ধ ও আশাহত হয়। ঢাকার তৎকালীন নবাব স্যার খাজা সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে একদল মুসলিম জনপ্রতিনিধি ('বাংলার বাঘ’ খ্যাত এ কে ফজলুল হক,, সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী অন্যতম) বঙ্গভঙ্গ রদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে পুর্ব বাংলার জনগনের ভাগ্য উন্নয়নে জন্য সর্ব প্রথম ১৯১২ সালের ৩১ জানুয়ারি  একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

পুর্ব বাংলার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের দাবিকে সম্মান জানিয়ে লর্ড কার্জন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আবেদনে সম্মতি দেন এবং একই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় রাজ্য সরকার কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র প্রকাশিত হয়।

এর ধারাবাহিকতায় ১৯১২ সালের ৪ এপ্রিল পুর্ববাংলার রাজ্য সরকারকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়। এই উদ্যোগে স্যার রবার্ট নাথানিয়েলের নেতৃত্বে ২৭ মে, ১৯১২ সালে ১৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠিত হয়।   এই কমিটি ‘নাথান কমিটি’ নামে পরিচিত। "নাথান কমিটি" দ্রুততার! সাথে ১৯১২ সালের শেষের দিকে রিপোর্ট প্রদান করে। 

১৯১৩ সালে  "নাথান কমিটি" রিপোর্ট জনমতের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত হয় এবং  ১৯১৩ সালের  ডিসেম্বরে রিপোর্ট টি অনুমোদন লাভ করে। ১৯১৩ সালে "নাথান কমিটি" এর রিপোর্ট অনুমোদন পেলেও ১ম বিশ্বযুদ্ধের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প স্থগিত থাকে দীর্ঘদিন।  নভেম্বর,১৯১৭ সালে ইংরেজ সরকার "স্যাডলার কমিশন" গঠন করে এবং পূর্ববর্তী ‘নাথান কমিশনে’র রিপোর্টকে পর্যালোচনা করে ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলোকে বিবেচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে নতুন করে রিপোর্ট দেয়।  ‘স্যাডলার কমিশন’ তাদের রিপোর্ট প্রদান করে  মার্চ,১৯১৭ সালে।

১৯১৭ সালে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী তৎকালীন ব্রিটিশ-ভারতের আইন সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও নিবন্ধনের জন্য আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যে একটি বিল উত্থাপন করেন।  ২৩ মার্চ, ১৯২০ সালে  ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯২০’ নামে বিলটি পাস হয়।  যার অধীনে ১ জুলাই,১৯২১ সালে পূর্ব বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশ) প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে স্যার সলিমুল্লাহ  মুখ্য ভূমিকা পালন করেন,। স্যার সলিমুল্লাহ'র দান করা ৬০০ একর জমিতেই ১০০ বছর ধরে দাড়িয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভর্তি হতে হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ টি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।  

কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট (বি ইউনিট)। 

বিজ্ঞান ইউনিট (এ ইউনিট)।

ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট (সি ইউনিট)।

চারুকলা ইউনিট (ডি ইউনিট)। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
pipilikait
pipilikait
pipilikait
pipilikait